Background

আমি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হতে চাই

‘আমি মা-বাবার একমাত্র মেয়ে। তাঁরা কখনো চাননি, আমি আন্ডার গ্র্যাজুয়েট করতে দেশের বাইরে চলে যাই। তাই যখন জানলাম, বাংলাদেশে একটা আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে, তখন আমি সেখানে ভর্তির জন্য পরীক্ষা দিলাম। তারপর পরীক্ষায় টিকে এখানে ভর্তি হলাম।’ বলছিলেন চট্টগ্রামের এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের (এইউডব্লিউ) আন্ডার গ্র্যাজুয়েট শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী নওরা মেহরীন।
মা-বাবার খুব আদরের মেয়ে। এই প্রথম
পরিবার ছেড়ে থাকা। তাই একাকিত্ব পীড়া দিলেও মানিয়ে নিয়েছেন খুব দ্রুত। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের সময়ে তো ঢাকায় যাওয়া হয়ই। এর পরও ফোনে কথা হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা, শিক্ষকদের আন্তরিকতা, গ্রীষ্মের ছুটিতে ইন্টার্ন করতে যাওয়া, নানা অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া প্রভৃতি মিলে এইউডব্লিউ ক্যাম্পাস এখন তাঁর সবচেয়ে ভালো লাগার জায়গা।
মেহরীন ২০০৯ সালে এইউডব্লিউর আন্ডার গ্র্যাজুয়েটে ভর্তি হন। ঢাকার সান বিমস থেকে ‘এ’ লেভেল শেষ করে এখানে আসেন।
২০১০ সালে এইউডব্লিউ থেকে শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে। একই সময় ব্যারিস্টার সারা হোসেনের সঙ্গে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টে (ব্লাস্ট) কাজ করেন। ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইতালি গেছেন ‘মানবাধিকার ও বিশ্বায়ন’ বিষয়ক সম্মেলনে যোগ দিতে।
মেহরীন ভালো বিতর্ক করেন। সম্প্রতি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বার্ষিক বিতর্ক প্রতিযোগিতায় তাঁর দল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এ ছাড়া অংশ নিয়েছেন বেশ কটি আন্ত:বিশ্ববিদ্যালয় বিতর্ক প্রতিযোগিতায়।
মেহরীন বলেন, ‘আপাতত একটি উন্নয়ন সংস্থায় যোগ দেওয়ার ইচ্ছে আছে। মাস্টার্স করতে দেশের বাইরে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে পড়াশোনা শেষে দেশে ফিরে চাকরি করতে চাই।’
মেহরীন দেশ-বিদেশে ঘুরতে পছন্দ করেন।
মেহরীন তাঁর আরেকটি স্বপ্নের কথা জানালেন। ‘বছর দশেক পর আমি রাজনীতিতে নামতে চাই, হতে চাই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। আমার রাজনীতির লক্ষ্য হবে তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের অবস্থার উন্নয়ন।’ এ ব্যাপারে বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে কথাও হয়েছে তাঁর। তাঁরাও একমত দেশের আর্থসামাজিক অবস্থার পরিবর্তনের জন্য রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার বিকল্প নেই। তবে এর বীজ তরুণ বয়সেই রোপণ করতে হবে বলে মনে করেন। মেহরীনের মতে, দেশের জন্য এ ধরনের মানুষেরই রাজনীতিতে আসা দরকার।
মেহরীনের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লায়। বেড়ে ওঠা ঢাকায়। মা লাভলী মোমিন একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের শিক্ষক, আর বাবা মোমিনুল ইসলাম একটি কোম্পানির অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক। মেহরীনের থেকে বয়সে তিন বছরের ছোট ভাই নিউরো সায়েন্স নিয়ে পড়াশোনা করছেন যুক্তরাষ্ট্রে।

তথ্যসূত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো 

aas