কেমিক্যাল ও ফরমালীন মুক্ত আম চেনার উপায় ...ফরমালিন শনাক্তকরণ যন্ত্র নিয়ে সন্দেহ !
কেমিক্যাল ও ফরমালীন মুক্ত আম চেনার উপায় ...
১. আমের গায়ে এক ধরনের সাদা পাউডার থাকে । যা পানিতে বা ফরমালীনে চুবালে
চলে যায় ।
২. কেমিক্যালে পাকানো আম হলুদ না হয়ে সাদার মত রং ধারন করে ।
৩. ফরমালীন দেওয়া আমে মাছি বসে না ।
৩. ফরমালীন দেওয়া আমে মাছি বসে না ।
ফরমালিন শনাক্তকরণ যন্ত্র নিয়ে সন্দেহ ;
আমে
ফরমালিনের অস্তিত্ব নিয়ে খাগড়াছড়ির বাগানমালিকেরা আতঙ্কে রয়েছেন।
বাগানমালিকদের দাবি, তাঁরা আমে ফরমালিন দেননি। তবু যন্ত্রে ফরমালিনের
অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে। আর তাই যন্ত্রটি নিয়ে বাগানমালিকদের মনে
সন্দেহ দেখা দিয়েছে। বিষয়টির সুরাহা করতে আমবাগানের মালিকেরা গতকাল সোমবার বিকেলে জেলা
প্রশাসকের সঙ্গে দেখা করেছেন। জেলা প্রশাসক যন্ত্রটির ব্যাপারে বিশেষজ্ঞদের
মতামত গ্রহণের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। আমে ফরমালিনের অস্তিত্ব পাওয়ায় এরই
মধ্যে পৌর এলাকার দুজনের দণ্ড হয়েছে।
খাগড়াছড়ি বাজারে গত বৃহস্পতিবার ভ্রাম্যমাণ আদালত আমে ফরমালিন মেশানোর দায়ে
খাগড়াছড়ি সদরের আম বিক্রেতা নাসির হোসেন ও নুরুল ইসলামকে দুই মাসের সশ্রম
কারাদণ্ড দেন। এ সময় অন্যান্য আমবাগানের মালিকেরা দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের
সঙ্গে কথা বলে জানতে চান, আসলে তাঁরা আমে ফরমালিন দিয়েছেন কি না।
দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা নিশ্চয়তা দিয়ে বাগানমালিকদের জানান, আমে ফরমালিন
মেশানো হয়নি। এর পর থেকে বাগানমালিকদের সন্দেহ দানা বাঁধে। খাগড়াছড়ি সদরের আমবাগানের মালিক সানু মং মারমা, অনিমেষ চাকমা, বাবু মারমা,
বাবুচ্যি মারমাসহ কমপক্ষে ১০ জন গত শনিবার পৌরসভার মেডিকেল টেকনোলজিস্ট অমর
বিকাশ চাকমাকে নিয়ে খাগড়াছড়ি পাহাড়ি গবেষণাকেন্দ্রে যান। তাঁরা
গবেষণাকেন্দ্রের গাছ থেকে পাড়া তরতাজা আম, পাকানোর জন্য আগে থেকে পাড়া আম ও
কেন্দ্রে দেশীয় জাতের—এই তিন ধরনের আম ফরমালিন শনাক্তকরণ যন্ত্রে পরীক্ষা
করেন। যন্ত্রে সদ্য পাড়া আমে ২৬ দশমিক ২৬ মাত্রা, পাকানোর জন্য সংরক্ষণ করা
আমে ৪ দশমিক ১৯ ও দেশি আমে ৮ দশমিক ৩০ মাত্রার ফরমালিনের অস্তিত্ব পাওয়া
যায়।
যন্ত্রে পরীক্ষা করার সময় খাগড়াছড়ি পাহাড়ি কৃষি গবেষণাকেন্দ্রের প্রধান
বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মহব্বত উল্লাহ্ও উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন,
গবেষণাকেন্দ্রে আমে ফরমালিন দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। রোগবালাই থেকে আমকে
রক্ষা করার জন্য অবশ্যই কীটনাশক, ছত্রাকনাশক ওষুধ ব্যবহার করা হয়। তিনি
সন্দেহ প্রকাশ করে বলেন, যন্ত্রটি আসলে ফরমালিনের অস্তিত্বের তথ্য দিচ্ছে,
নাকি আমের অন্য রাসায়নিকের তথ্য দিচ্ছে? ফরমালিন শনাক্তকরণ যন্ত্রটি ডিজিটাল। এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফরমালিন শনাক্ত
করতে পারে। ব্যবহূত যন্ত্রটির নাম ফরমালডিহাইড মিটার। মডেল নং জেড-৩০০। এর
দেশীয় সরবরাহকারী হচ্ছে ট্রেসার ইলেকট্রোকম। খাগড়াছড়ির মেয়র রফিকুল আলম বলেন, পৌরসভার অর্থ ব্যয় করে যন্ত্রটি তিন মাস
আগে কেনা হয়েছে। এ ব্যাপারে তিনি প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলবেন বলে আমবাগানের
মালিকদের আশ্বস্ত করেন। জেলা প্রশাসক মাসুদ করিম বলেন, শনাক্তকরণ যন্ত্রটি বিদেশে তৈরি। যন্ত্রটি
সঠিক তথ্য দেবে, এর নিশ্চয়তা কোম্পানি থেকে দেওয়া আছে। তবু এ ব্যাপারে
আলোচনা করে দেখা হবে।
মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে বিষাক্ত ৯৯ টন আমঃ (দৈনিক প্রথম আলো, তারিখঃ ১৮-০৬-২০১৩)
মেহেরপুরের গাংনীতে ফরমালিনযুক্ত ৯৯ টন আম ধ্বংস করার প্রক্রিয়া শুরু
হয়েছে। উপজেলার কাজীপুর গ্রাম থেকে জব্দ করা বিষাক্ত সেই আম ১৯ দিন পর
গতকাল সোমবার থেকে মাটিচাপা দেওয়া শুরু হয়েছে। আমগুলো কাজীপুর গ্রামের আবদুল মজিদের বাড়িতে ৮৭৮টি ড্রামে সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাত করা হচ্ছিল।
কাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আলম হুসাইন জানান, ভ্রাম্যমাণ
আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আম ধ্বংসের কাজ শুরু
হয়। আমগুলো যেখানে জব্দ করা হয়, সেখান থেকে তিন কিলোমিটার দূর হাড়াভাঙ্গা
আখমাড়াই কেন্দ্রের পূর্বে গর্ত খুঁড়ে সেখানে ফেলা হচ্ছে। পরে তা বালু দিয়ে
ভরাট করা হবে। এ প্রক্রিয়া শেষ করতে দু-তিন দিন লাগবে। ব্যয় হবে ৭০-৮০
হাজার টাকা। ওই টাকা জব্দকৃত ড্রাম বিক্রি করে নির্বাহ করা হবে। গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহামঞ্চদ আবদুস সালাম জানান, ১৫
জুনের মধ্যে নির্বাহী হাকিমের উপস্থিতিতে আমগুলো ধ্বংসের জন্য প্রাণ
কোম্পানিকে চিঠি দেওয়া হয়। তাতে বলা হয়, অন্যথায় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান
ড্রাম বিক্রির টাকা দিয়ে জব্দকৃত আম ধ্বংস করবে। সেই চিঠির কোনো সাড়া না
পাওয়ায় বিষাক্ত আমগুলো স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে ধ্বংস করা হচ্ছে।
এ আমের দাম প্রায় দেড় কোটি টাকা। পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা
(বিএসটিআই) খুলনার ঊর্ধ্বতন পরীক্ষক মাসুম বিল্লাহ জানান, তিনি ঘটনাস্থলে
গিয়ে পরীক্ষা করে আমে উচ্চমাত্রায় ফরমালিনের উপস্থিতি শনাক্ত করেন, যা খেলে
মানবদেহের কিডনি, পাকস্থলীর ক্ষতিসহ দ্রুত মৃত্যুর কারণ হতে পারত। তবে
আমগুলো ড্রামের মুখ আটকে রোদের নিচে যেভাবে সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাত করা
হচ্ছিল, সেটাও বিষক্রিয়ার কারণ হতে পারে।
গত ২৮ মে ভ্রাম্যমাণ আদালত কাজীপুর মাঠপাড়ায় আবদুল মজিদের বাড়ি থেকে ৮৭৮টি
ড্রামভর্তি আম জব্দ করেন। সেখান থেকে আবদুল মজিদ ও মুরাদ হোসেনকে গ্রেপ্তার
করা হয়। আদালত দুজনকে দুই বছরের কারাদণ্ড, এক লাখ ৩০ হাজার টাকা জরিমানা,
অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন। তাঁরা এখন মেহেরপুর কারাগারে আছেন।
সুত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো